প্রথম স্ত্রীর প্রেগন্যান্সির সময় ‘মৌখিকভাবে’ দ্বিতীয় বিয়ে করে এক মাস পর তালাক দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষার্থীর প্রথম স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তাকে না জানিয়ে গোপনে এ বিয়ে করেছে তার স্বামী। এতে সামাজিকভাবে সম্মানহানি হয়েছে তার।
১৬ জুন শুক্রবার বিষয়টির সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা মঞ্চ বসার কথা রয়েছে। সেখানে বিষয়টির শুনানি হবে।
জানা যায়, দুই বিয়ে করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর নাম দেওয়ান শহিদুল ইসলাম সীমান্ত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের তিনজনের এ বিয়ের খবর ক্যাম্পাসে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। অনেকে এটা নিয়ে ট্রল করছেন আবার কেউ হাসাহাসি করছেন। তবে ওই ছাত্রের প্রথম স্ত্রী এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। তিনিও একই ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ান শহিদুল ইসলাম সীমান্ত তার প্রথম স্ত্রীর প্রেগন্যান্সির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের একই ব্যাচের মেহেরুন্নেসা মীম নামে এক ছাত্রীকে ‘মৌখিকভাবে’ বিয়ে করেন। এক মাসের সংসারের পর আবার তাদের মৌখিভাবে ছাড়াছাড়িও হয়ে যায়। সীমান্তের বাড়ি খুলনা জেলার সদর উপজেলায় এবং মীমের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায়।
জানা যায়, দেওয়ান শহিদুল ইসলাম সীমান্ত গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর মেহেরুন্নেসা মীমকে ‘মৌখিকভাবে’ বিয়ে করেছেন। তখন তার প্রথম স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন। সীমান্তের ভাষ্যমতে, সেই বিয়ের সাক্ষী ছিল পিয়াল ও হাসান। বিয়ের পর সীমান্ত ও মীম একমাস সংসার করেছেন। পরবর্তীতে সীমান্ত আবার মীমকে মৌখিকভাবে তালাক দেয়। তবে এ বিয়ে ও তালাকে প্রথম স্ত্রীকে কিছুই জানানো হয়নি।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর সহপাঠীরা জানিয়েছেন, সীমান্ত এই মৌখিক বিয়ের আগে পরিবারগতভাবে এক ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ওই (প্রথম স্ত্রী) ছাত্রীকে বিয়ে করেন। তার প্রথম স্ত্রী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। এই সংসারে তাদের আটমাস বয়সী একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। কেউ হাস্যরসে বলছেন, বিধবা বিবাহের জনক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। আর এদিকে মৌখিক বিবাহের জনক দেওয়ান শহিদুল ইসলাম সীমান্ত। আবার কেউ কেউ মৌখিক বিয়েকে পরকীয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ঘটনার পর থেকে দেওয়ান শহিদুল ইসলাম সীমান্ত তার স্ত্রীর বাসায় রয়েছেন বলে ভুক্তভোগী ছাত্রী নিশ্চিত করেছেন। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে দেওয়ান শহিদুল ইসলাম সীমান্তের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী মীম জানান, এই মুহূর্তে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন।
ইংরেজি বিভাগের ওই (প্রথম স্ত্রী) ছাত্রীর সঙ্গে দেওয়ান শহিদুল ইসলাম সীমান্তের পারিববারিকভাবে বিয়ে হয় ২০২১ সালের নভেম্বরে। দেওয়ানের দ্বিতীয় বিয়ের খবরে অনেকটা ভেঙে পড়েছেন তার প্রথম স্ত্রী।
জানতে চাইলে দেওয়ানের প্রথম স্ত্রী জানান, তাদের (দেওয়ান ও মীম) দুজনের এই সম্পর্কের কথা আগে জানতাম না। অল্পকিছু দিন আগে সেটা জেনেছি। অথচ আমি যখন প্রেগন্যান্সির সময় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, তখন ওই মেয়ে (মেহেরুন্নেসা) আমাকে দেখতে আসে, মানুষ কীভাবে এমন হতে পারে। স্বামীর এমন আচরণ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। এ বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা মঞ্চে যোগাযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, আমি বর্তমানে আমার সন্তানকে নিয়ে দোটানায় পড়ে গেছি। মানসিকভাবে আমি এক প্রকার বিধস্ত। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।