ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠি ইকো পার্কের ভাগ্যাকাশে এখন কালো মেঘের ছায়া। নয়নাভিরাম এই পার্কটি এখন চলে যাচ্ছে ব্যক্তি মালিকানায়। সম্প্রতি ইকোপার্ক নিয়ে চলমান মামলায় হেরে গেছে সরকার পক্ষ। অভিযোগ রয়েছে ধার্য তারিখে আদালতে উপস্থিত হননি সরকার পক্ষের আইনজীবী।
২০০৩ সালে ঝালকাঠির গাবখান চ্যানেল, সুগন্ধা ও বিশখালী নদীর মোহনায় সরকারের ১ নং ক্ষতিয়ানের প্রায় ২০/২৫ একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠে নয়নাভিরাম ইকোপার্ক। এরপরে এখানে বালু ফেলে ও গাছ লাগিয়ে পার্কটির যখন সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলছিলো তখন একটি একটি ভুমিখোকো চক্র ইকো পার্কের জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করে। তখন থেকেই বন্ধ হয়ে যায় ইকোপার্কের উন্নয়নমুলক কার্যক্রম। তবে পার্কটির তেমন কোন অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হলেও তিন নদীর মোহনায় ইকোপার্কের খোলা মাঠে এখনও অনেকেই আসেন অবসর বিনোদনের জন্য। শীতকালে এখানে থাকে বনভোজনের উৎসব। দীর্ঘ মামলা জটিলতার এক পর্যায় স্থানীয় ভুমিখোকো চক্রটির সাথে যোগসাজশে সম্প্রতি ইকোপার্কের এই জমিসহ ৩টি মৌজার মোট ৮৮.৩৬ একর জমির মালিকানা দাবি করে ঝালকাঠি ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন ঝালকাঠি পৌরমেয়রের ছেলে ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম তালুকদার। মাত্র ৫৯ দিনে এ মামলায় তিনি পক্ষে রায় পান (ডিগ্রী লাভ করেন) । সর্বশেষ গত ১৪ ডিসেম্বর মনিরুল ইসলাম তালুকদার একই আদালতে একই সম্পত্তির সত্ত্ব ঘোষনার জন্য আরেকটি মামলা দায়ের করেন। ২০২২ সালের ৮ মার্চ এই মামলায়ও পক্ষে রায় পান (ডিগ্রী লাভ করেন)। মামলায় সরকার প্ক্ষ ছাড়াও স্থানীয় আরো ৪ জনকে বিবাদী করা হয়। জেলা প্রশাসনের দাবি ইকোপার্কের ২০/২৫ একর জমিসহ এখানকার ৩টি মৌজার ৮৮.৩৬ একর জমির অধিকাংশই সরকারের ক্ষতিয়ানে রয়েছে। এদিকে মামলায় ধার্য তারিখে সরকার পক্ষের আইানজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেননা। অথচ জেলা প্রশাসন এ মামলার সমন বা নোটিশ গ্রহন করেছেন।
এ বিষয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, এ ব্যাপারে শিগ্রই ডিগ্রী রদ করার মামলা করা হবে। এছাড়া ইকোাপার্ক রক্ষায় যা যা করার দরকার সবকছিুই করা হবে বলে জানান তিসি।
বাদি পক্ষের আইনজীবী মাহবুবুল আলম কবির বলেন, এই মামলায় সরকার ও স্থানীয় কয়েকজনের নামে রং রেকর্ড হয়েছিলো। সরকার পক্ষ এই মামলার শুনানির নোটিশ গ্রহন করলেও তারা ধার্য তারিখে আদালতে হাজির হয়নি। এছাড়া স্থানীয় যারা বিবাদী ছিলেন তারা বাদীর দাবি মেনে নেয়ায় এ মোকাদ্দমায় আদালত বাদি পক্ষে রায় প্রদান করেন।
এদিকে ধার্য তারিখে আদালতে উপস্থিত না থাকা প্রসঙ্গে সরকার পক্ষের আইনজীবী (জিপি) মীর রফিকুল ইসলাম আজম বলেন, এই মামলার কোন সমন বা নোটিশ জেলা প্রশাসন থেকে যথাসময় জিপির দপ্তরে পৌছানো হয়নি। যার কারনে জিপির দপ্তর এ বিষয় অবগত ছিলোনা এবং ধার্য তারিখে আদালতে উপস্থিত হতে পারেনি।
এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দু:খজনক। ইকো পার্ক রক্ষায় শিগ্রই ঝালকাঠি নাগরিক ফোরাম আন্দোলন কর্মসূচী দেবে। #