নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ॥
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা পরীক্ষায় ভোগান্তি চরমে উঠেছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত করোনার নমুনা সংগ্রহ করার কথা থাকলেও সকাল ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করছে তারা। বেলা ১২টার পর আগতদের তারা ফিরিয়ে দিচ্ছে। করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে এই কাউন্টার থেকে সেই কাউন্টারে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে রোগীরা। সময় অতিবাহিত হওয়ার ভয় দেখিয়ে করোনা পরীক্ষা করতে আসা ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। করোনার নমুনা পরীক্ষায় কোন অনিয়ম পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডের ফ্লু কর্নারে রোগীদের সাথে কর্মচারীদের বাদানুবাদ এখন নিত্য দিনের। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নমুনা পরীক্ষায় রোগীদের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। আরটি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি কর্তব্যরত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী র্যাপিট এন্টিজেন পরীক্ষাও করা হয় সেখানে।
করোনা পরীক্ষা করতে যাওয়া রোগী সিদ্দিকুর রহমান জানান, তারা এই রুম সেই রুম ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত। বিশেষ করে বয়স্ক কিংবা শারীরিকভাবে অক্ষম মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এক জায়গায় টিকেট এবং আরেক কক্ষে ডাক্তার দেখিয়ে নমুনা দিতে পারলে মানুষের দুর্ভোগ হতো না বলে তিনি জানান।
করোনা ওয়ার্ডে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো.হোসেন জানান, প্রতিদিন গড়ে ১৬০ থেকে ১৭০টি করোনা নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এর মধ্যে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ৫-৬টি নমূনা র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা হয়। বাকী নমুনা চিকিৎকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী মেডিকেলের আরটি পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়।
করোনা ওয়ার্ডের দায়িত্বরত কর্মচারী প্রকাশ চন্দ্র রায় জানান, করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিকেট কাটতে ১১টাকা এবং করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য ১০০ টাকা সরকারিভাবে নেয়া হয়। এর বাইরে কোন টাকা নেয়া হয় না বলে জানান তিনি।
শের-ই বাংলা মেডিকেলের উপ-পরিচালক ডা. জসিম উদ্দিন হাওলাদার জানান, করোনা পরীক্ষায় বাড়তি টাকা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। জনবল সংকটের কারণে করোনা পরীক্ষায় কিছুটা ধীর গতির কথা স্বীকার করেন তিনি।
বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ২৩ মার্চ থেকে শুরু হয় র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা। এ পর্যন্ত ২২৩৮টি র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষায় ৩০১ জনের রিপোর্ট পজিটিভ হয়। বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০টি করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হয় বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন ডা.মো. মনোয়ার হোসেন।