জনতার খরব ডেক্সঃ
ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামছে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদীর বুকে জেগে উঠা দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র প্রাকৃতিক সুন্দার্য্য মন্ডিত পর্যটন কেন্দ্র ছৈলারচরে। ছৈলারচরে প্রতিটি স্পর্ট এখন লোকে লোকারণ্য। ফলে জমে উঠছে এখানকার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা।
সরজমিনে দেখা যায়, গত দুই বছর করোনাভাইরাসে নিষেধাজ্ঞার কারণে ঘরবন্দি জীবন কাটিয়ে দক্ষিণাঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসু মানুষ এখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে কাঠালিয়ার ছৈলারচরে ছুটে আসছেন। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আগত পর্যটকরা অতি সম্প্রতি ছৈলারচরে গড়ে উঠা বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
করোনার কারণে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে না যাওয়ার অভিমত ব্যক্ত করেছেন পর্যটকেরা। তারা বলছেন, এবারের ঈদে প্রকৃতির অকৃপণ রূপ-লাবণ্যে ঘেরা এই পর্যটন কেন্দ্রে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। এক সময় এখানে আসা এবং ঘুরেফিরে দেখা কষ্টের ছিল। তবে বর্তমানে এখানে উন্নয়নের ফলে পরিবর্তন আসছে। ঈদের তৃতীয় দিন বিকেলে ঈদ উপলক্ষে ছৈলারচরে ঘুরতে আসা একাধিক পর্যটক এসব জানিয়েছেন। যদিও বৈরী আবহাওয়া বিরাজমান থাকলেও বিপুল পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল।
দর্শনার্থীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে ছৈলারচরকে। চরের পাশে ১ একর জমিতে ডিসি লেক। লেকের চার পাশে ২০ ফুট প্রশস্তের হাঁটাপথ এক পাশে রয়েছে বিভিন্ন দৃষ্টিন্দন রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর দোকান। এরপরেই অভ্যর্থনা জানাবে চরে প্রবেশের সুসজ্জিত ব্রিজ। ব্রিজ পাড় হলেই চরের বনাঞ্চলের একাংশে বসার জন্য অর্ধশত আসন, রং-বেরংয়ের ফুলের বাগান, রাত যাপনের জন্য আধুনিক দৃষ্টিন্দন কটেজ, দোলনা, অস্থায়ী নাগর দোলা। এত উপভোগের পরেই হাঁটা যাবে মূল ছইলার বনাঞ্চলে , মিলবে সুন্দরবনের আদলে অপূর্ব সৌন্দর্যের আঁচলে ঢাকা প্রাকৃতিক বনাঞ্চল দেখার স্বাদ।
দুই বছর আগেও এমন রূপে দেখা যায়নি ছৈলারচরে। হাঁটার পথ ছিল না। ঢোকার মুখে ছিল পানি-কাঁদা। বসার কোনো স্থান ছিল না। চরটিতে যেতেও পোহাতে হতো ভোগান্তি। সব ধরনের দূর্ভোগ লাগব করে এই পর্যটন কেন্দ্রটির আমূল পরিবর্তন এনেছেন কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার। তার হস্তক্ষেপে বদলে গেছে এখানকার চিত্র।
পার্শ্ববর্তী উপজেলা রাজাপুর থেকে ঘুরতে আসা মাহমুদ হোসেন বলেন, বিগত দুই বছর করোনা থাকায় আমরা কোথাও ঘুরতে যেতে পারি নাই। এখন আমাদের পার্শ্ববর্তী কাঠলিয়া উপজেলার ছৈলার চর পর্যটন কেন্দ্রে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। আমাদের খুবই ভালো লাগছে। এখানে এসে একই সাথে প্রাকৃতিক ও নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরেছি।
নাজমিন তুলি আক্তার জানান, ঈদের খুশিতে সন্তানকে নিয়ে ছৈলার চর পর্যটন কেন্দ্রে এসে আমার ভালো লেগেছে। আমার মেয়ে দোলনা ও নাগর দোলায় চরতে পেরে খুবই খুশি হয়েছে।
ঘুরতে আসা হাফিজা আক্তার জানান, ছৈলার পর্যটন কেন্দ্রের ডিসি লেক, মুক্তিযোদ্ধা ইকো পার্ক ও ছৈলার চরে এতলোকের সমগাম হয়েছে যে, কোন জায়গায় তিল ধরনের ঠাই ছিলো না। আমার সন্তানদের কে নিয়ে তাদের পছন্দমত খাবার ও কেনা-কাটা করতে পেরেছি, বাচ্চারা খুবই আনন্দ করতে পেরেছে।
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ছৈলারচরকে বিশ্বমানের পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। ইতোমধ্যে পর্যটকদের জন্য অনেক উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পর্যটক বরণে সর্বদা প্রস্তুত ছৈলারচর। এবারের ঈদে করোনার খরা কাটিয়ে পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে মুখর। পর্যটকেরা যাতে সকল প্রাকৃতিক দৃশ্য নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে অবলোকন ও উপভোগ করতে পারেন সেজন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থাও নিয়েছে কাঠালিয়া উপজেলা প্রশাসন।