বরিশাল প্রতিনিধিঃ রাজধানী ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়াগামী এমভি বন্ধন-৫ নামের একটি ডাবল ডেকার লঞ্চে জুয়ার আসর বসায় ১০/১২ জনের একটি সংঘবন্ধ চক্র। ওই চক্রের কাছে ছিনতাইয়ের শিকার হন ডিএমপিতে কর্মরত আল জাবের তুষার(২৫) নামের এক পুলিশ কনস্টেবল। ওই পুলিশ সদস্য বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামের মো. জাকির হোসেন মাতব্বরের ছেলে। ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। এসময় পুলিশ সদস্য ও তাঁর ভাই মো. জয়কে (২০) বেধড়ক মারধর করা হয়। ছিনিয়ে নেয় নগদ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কালাইয়াগামী ওই লঞ্চে এমন ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়নের দুই যুবলীগ নেতা রুমন ও ইশাদ হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি মো. রফিকুল ইসলাম (৩৮) ও মো. রাসেল হাওলাদারসহ (৩৭) ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ লঞ্চটিতে জুয়ার আসার বসায়। এ নিয়ে প্রতিবাদ করার লঞ্চের যাত্রী পুলিশ সদস্য তুষার ও তার ভাইকে মারধর করেন জুয়াড়ি চক্র। এসময় ছিনতাই করে পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা, দুটি মোবাইল ফোন ও স্বর্ণের চেইন নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
সূত্রমতে, ঢাকা–দক্ষিণাগামী ডাবাল ডেকার লঞ্চগুলোতে সংঘবদ্ধ এ চক্রটি জুয়ার আসর বসিয়ে সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ঘটছে চুরি- ছিনতাইয়ের মত ঘটনা। এমন অভিযোগ বহু পুরানো। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তবে অদৃশ্য কারণে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
অপরদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, বন্ধন লঞ্চের সুপারভাইজার মো. শাহজাহানের যোগসাজশে লঞ্চে প্রতিনিয়ত জুয়ার আসর বসে। জুয়ার আসার চালায় রফিক-রাসেল চক্র।
এসময় উপস্থিত থাকে চক্রের আরও ১০/১২জন সদস্য। জুয়ার আসরে যাত্রীদের সাথে গায়ে পরে জামেলার সূত্রপাত ঘটায় চক্রের সদস্যরা। পরে ওই যাত্রীদের মারধর করে ছিনতাই করে নিয়ে যায় টাকা পয়সা, মোবাইল ফোন। অপরদিকে জুয়ার আসর থেকে নির্দিষ্ট একটা অর্থ চলে যায় লঞ্চ সুপারভাইজার শাহজাহানের পকেটে। এই নৌ রুটে এমন ঘটনা নিত্যদিনের।
এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য তুষার বলেন, ‘রফিক- রাসেলসহ কয়েকজন ছিনতাইকারী আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে মারধর করেয় নগদ দেড় লাখ টাকা, দুটি ভিভো মোবাইল ফোন ও দেড় ভড়ি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। লঞ্চের সুপারভাইজার শাহজাহানসহ কয়েকজন লঞ্চ স্টাফ ছিনতাই কারীদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে শাহজাহান বলেন, ‘জুয়া খেলা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আমি কাউকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করিনি। পালানোর সময় আমি দেখিও নি। শুনছি একটা ট্রলার লঞ্চের সাথে থামিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
এবিষয়ে এমভি বন্ধন লঞ্চের ম্যানেজার আবু আবদুল্লাহ বলেন, ‘জুয়াড়ি চক্রের সাথে কর্তৃপক্ষের কোন সম্পৃক্ততা নেই। জুয়াড়িরা কৌশলে লঞ্চে উঠে গোপনে জুয়ার আসার বসায়। আর পুলিশ সদস্যকে মারধর, ছিনতাই ও ছিনতাইকারীদের পালিয়ে যেতে আমাদের কোন স্টাফ সাহায্য করেনি।
এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘ ঘটনা ঘটেছে চাঁদপুর এলাকায়। যে কারণে চাঁদপুর পুলিশ ও নৌ পুলিশ এবিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নিবেন।’