রংপুর প্রতিনিধিঃ
শুক্রবার একসাথে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ফরিদা বেগম (২৬)। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড় হযরতপুর ইউনিয়নের বলদী বাতান গ্রামের ঘটনা এটি।
তিন নবজাতক সন্তানসহ মা ফরিদা বেগম শারীরিকভাবে সুস্থ। তবে ঘরে কোনো খাবার নেই। তিন দিন ধরে না খেয়ে বেশ ক্লান্ত এই মা। আর মা খেতে না পাওয়ায় বুকে দুধও আসছে না।
ওই গ্রামের মেনাজ উদ্দীনের ছেলে জিয়াউর রহমানের সাথে পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয় একই উপজেলার মাহিয়ারপুর গ্রামের মৃ;ত জয়েব উদ্দীনের মেয়ে ফরিদা বেগমের। স্বামী জিয়াউর রহমান পেশায় গরু ব্যবসায়ী (দালাল)।
করোনা মহামারীর কারণে গরুর হাটসহ প্রায় সব ধরনের হাট-বাজার বন্ধ। ফলে আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে জিয়াউর রহমানের। এমন অভাব-অনটনের মধ্যে গত শুক্রবার একসাথে তিন কন্যা সন্তান আসে জিয়ার ঘরে।
ফরিদা বেগম বলেন, ‘মোর বাড়িত খাওয়ার নাই। মুই তিন দিন ধরি না খায়া আছো (না খেয়ে আছি)। ছইলগুলাক (সন্তানদের) কি খায়াও (খাওয়াবো)? ওমার (অন্যের)
বাড়ি থাকি একনা গুড় চায়া আনি ছইলগুলাক হালওয়া বানি দিছো (নবজাতকদের গুড় দিয়ে হালুয়া বানিয়ে দিয়েছি)। স্বামী হাটোত যায়া (হাটে গিয়ে) কামাই করিয়া আনছিল তাও করোনায় লকডাউনের কারণে বন্ধ হয়া গেইছে।
ছইলগুলাক মুই কী খিলাও (সন্তানদের কী খাওয়াবো), মুই কি খাও (আমিবা কী খাবো)? খাওয়ন না পায়া মোর ছইলগুলা শুকি গেল (খাবারের অভাবে সন্তানগুলো শুকিয়ে গেছে)।’
ফরিদার স্বামী জিয়াউর রহমান জানান, শুক্রবার গভীর রাতে তার স্ত্রী তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে জমজ ওই তিন নবজাতকসহ মা ফরিদা বেগম বাড়িতে সুস্থ আছেন।
গরুর হাট বন্ধ থাকায় করোনায় সংসারের আয়ও বন্ধ হয়ে যায়। তবে বর্তমানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করে জিয়াউর রহমান যা পান, তা দিয়েই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তার সংসার চলছে। কিন্তু কাজ না থাকায় তিন ধরে ঘরে কোনো খাবার নেই বলেও জানান জিয়াউর রহমান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন ভুঁইয়া বলেন, খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।