ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য আন্তঃআঞ্চলিক গোষ্ঠীর জোট বিমসটেক-এর কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। থাইল্যান্ডে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জোর দিয়ে এ কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন, ভূরাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই সাত রাজ্য ‘বিমসটেকের জন্য একটি সংযোগ কেন্দ্রে’ পরিণত হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যকে ‘ল্যান্ডলকড’ বা ভূবেষ্টিত আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, ভারতের এই রাজ্যগুলোর সমুদ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ।
মোদি এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করেন, যার ঠিক এক দিন পর শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ব্যাংককে তার ও ড. ইউনূসের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েটংটার্ন সিনাওয়াত্রার আয়োজিত নৈশভোজে মোদি ও ইউনূস প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হন।
নৈশভোজে নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূস ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির মাঝে বসেছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা অনুরোধ করায় বৈঠকটি ‘আলোচনার পর্যায়ে’ রয়েছে। ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, এ দুই নেতা আজ শুক্রবার বিকেলে শীর্ষ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরপরই বৈঠক করবেন। বৈঠকটি যদি হয়, তবে ২০২৪ সালের আগস্টে ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ দুই নেতার মধ্যে এটি প্রথম সাক্ষাৎ হবে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় গত বুধবার স্পষ্ট করে জানায় যে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সম্পর্কে তার মন্তব্য ‘সৎ উদ্দেশ্য’ নিয়ে করা হয়েছিল, তবে তা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি যখন বেইজিংকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের সুবিধা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চীনে কথা বলছিলেন, তখন ভারত তা নিয়ে ভ্রু কুঁচকেছিল।
মোদি গত সপ্তাহে বাংলাদেশ জাতীয় দিবসে ইউনূসকে চিঠি লিখে অভিনন্দন জানান এবং একে অপরের স্বার্থ ও উদ্বেগের প্রতি পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে একসঙ্গে কাজ করার তাৎপর্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশ সরকারের সূত্র অনুযায়ী, ভারত বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং দেশে ক্রমবর্ধমান উগ্রবাদের মধ্যে সংখ্যালঘুদের হুমকির বিষয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে।