রাজাপুর প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে স্বামী পরিত্যক্তা এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বুধবার সকালে পাঁচজনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন ওই নারীর বড় বোন সুখি বেগম (৪৫)। গত ৩ জুন সকালে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুত্র সন্তানের জন্ম দেন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারী। তিনি মা হলেও সন্তানের বাবা কে হতে পারে তা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অবশেষে সন্তান প্রসবের ৬দিন পর এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে পুলিশ সন্তানের পিতৃ পরিচয় খুঁজে বের করার জন্য মাঠে নেমেছে।
বুধবার দুপুরে ঝালকাঠির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া সার্কেল) মো. শাখাওয়াত হোসেন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই খোকন হাওলাদার ঘটনাস্তল পরিদর্শন করেন। মামলার আসামিরা হলেন, পূর্ব রাজাপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে মো. রাহাত হোসেন (৩২), উত্তর সাউথপুর গ্রামের আবদুল লতিফ হাওলাদারের ছেলে মানিক হাওলাদার (২৮), পূর্ব রাজাপুর গ্রামের বেল্লাল খা’র ছেলে মো. তারেক খা (২৮), চুনপুরী গ্রামের মো. আরিফ (৩০) ও আলী আহম্মদের ছেলে মো. নাসির (৪০)।
মামলায় বাদী সুখি বেগম অভিযোগ করেন, তাঁর ছোট বোন (৩০) একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। ১৫ বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। ১২ বছর বয়সী তাঁর একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। ৮ বছর আগে স্বামী তাকে তালাক দিলে ভিক্ষা করেই জীবিকা নির্বাহ করতো সে। বোনের বাড়ির পাশে একটি ঘরে সে বসবাস করে। ৯ থেকে ১০ মাস আগে তাঁর ঘরে লোকজনের উপস্থিতি টের পেতেন মামলার বাদী বড় বোন।
তিন মাস আগে বোনের পেট উঁচু দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। এ বিষয়ে বোনকে জিজ্ঞেস করলে পেটের ভেতরে টিউমার হয়েছে বলে সে জানায়। গত ২ জুন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজমা ইয়াসমিন মুন্নির সহযোগিতায় তাকে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ৩ জুন ওই নারী এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মামলার বাদী তাঁর বোনকে ধর্ষণের বিচারের পাশাপাশি সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর পিতৃ পরিচয় খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন মামলার এজাহারে।
এ ব্যাপারে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল খায়ের রাসেল বলেন, বর্তমানে মা ও নবজাতক শিশুটি সুস্থ রয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ভর্তির সময় ওই নারীর স্বামীর নাম পাওয়া যায়নি।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এজাহারে যাদের নাম রয়েছে প্রথমে তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। এরপরে সন্দেহভাজনদের আটক করে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। সন্তানটির প্রকৃত পিতাকেও খুঁজে বের করার জন্য যা করা দরকার পুলিশের পক্ষ থেকে তা করা হবে।