আন্তর্জাতিক ডেক্সঃ ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর। টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর জ্বলে উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আল-কায়দাকে শায়েস্তা করতে ঘাঁটি গড়ে আফগানিস্তানেও। উচ্ছেদ করে আল-কায়দার মদতদাতা তালেবানদের। এরপর থকে আফগান সেনার হাত মজবুত করতে একের পর এক অস্ত্র, রণসজ্জার জোগান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেসময় আধুনিক ড্রোন থেকে হেলিকপ্টার বা রকেট লঞ্চার- সবই তুলে দিয়েছে আফগান সেনাদের হাতে। যাদের ধ্বংস করতে এসব অস্ত্র দেওয়া হয়েছিল, আজ সেই তালেবানদের হাতেই সেসব।
গত কয়েক মাস ধরে এক এক করে আফগানিস্তানের নগর, জনপদ, গ্রাম দখল করছিল তালেবান। অবশেষে গত রবিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবানরা। দেশ ছেড়ে পালান আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। এরপরে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদও দখল করে নেয় তালেবান। সেই সঙ্গে আফগান সরকারের সকল সম্পত্তি এবং সেনাবাহিনীর অস্ত্র দখল করে তারা।
আমেরিকাসহ ন্যাটো বাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্রও হাতে পেয়েছে তালেবানরা। ট্যাঙ্ক, কামান, মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার ভারি মেশিনগানের পাশাপাশি দখল করেছে হেলিকপ্টার এমনকি, অত্যাধুনিক পাঁচটি ‘স্ক্যান ঈগল ড্রোন’। কুন্দুজ বিমানঘাঁটি থেকে দখল করা ওই ড্রোনগুলি বহুদূরে নজরদারি চালাতে সক্ষম। আফগান সেনাকে দেওয়া হয়েছিল আমেরিকান এম-২৪ স্নাইপার রাইফেল, এম-৪ কার্বাইন এবং এম-২৪০ হালকা মেশিনগান। কাবুল দখলের পরই তালেবান জঙ্গিদের হাতে সেগুলো দেখা গেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আফগান সেনাকে দেওয়া এম-২ ব্রাউনিং ভারি মেশিনগান, অত্যাধুনিক ছয় নলা এম-১৩৪ মিনিগানও পেয়ে গেছে তালেবান। এই সব হালকা এবং মাঝারি অস্ত্রের অনেকগুলো আবার পাকিস্তানের সেনাও ব্যবহার করে।
গৃহযুদ্ধে আফগান সেনার ব্যবহৃত আমেরিকান এম-১১৩ ‘আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার’ বা এম-১১১৭ ‘ইন্টারন্যাল সিকিউরিটি ভেহিকল’–এর বড় অংশও এখন তালেবানরা কুক্ষিগত করেছে। পাশাপাশি, ন্যাটো বাহিনীর ন্যাভিস্টার মিলিটারি ট্রাক এবং ফোর্ড রেঞ্জার গাড়িতে তালেবানদের চেপে বসার ছবি এখন প্রকাশ্যে। মার্কিন সেনার এম-১১৪ কামানের অনেকগুলোই দখল করেছে তালেবানরা।
তবে সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির অনুগত বিমান বাহিনীর বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার এবং যুদ্ধবিমান উজবেকিস্তানে সরিয়ে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। তবে ভারতীয় বিমান বাহিনীর দেওয়া একটি এম-২৪ যুদ্ধ হেলিকপ্টার দখল করেছে তালেবান। এত অস্ত্র হাতে পেয়ে কী করবে তারা, সেই নিয়ে চিন্তায় গোটা দুনিয়া।