আজ চুম্বন দিবস। সারা বিশ্বের মানুষ এই দিনে তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করতে তাদের সঙ্গীদের চুম্বন করে থাকেন । ভালোবাসার সম্পর্কের মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি ছোঁয়া হলো- কিস অর্থাৎ চুম্বন বা চুমু। যেই ছোঁয়াটুকুর মধ্যে থাকে পরম মমতা, বিশ্বস্ততা। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন শরীরও ভালো রাখতেও চুম্বনের ভূমিকা আছে ।
বিভিন্ন গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে, ভালোবাসা প্রকাশের এই মাধ্যমে শরীরের নানা উপকারিতাও লুকিয়ে আছে। চুম্বনকে মনের খোরাকের পাশাপাশি শরীরের খোরাকও বলা যেতে পারে। জেনে নিন চুম্বনের বিস্ময়কর স্বাস্থ্য উপকারিতা-
হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে
চুম্বনের ফলে মস্তিষ্ক অক্সিটোসিন, ডোপামিন এবং সেরোটোনিনের মতো রাসায়নিক নির্গত করে, যা মনকে আনন্দিত করে এবং উৎফুল্লতায় ভরিয়ে তোলে। এগুলো ‘হ্যাপি হরমোন’ নামেও পরিচিত।
মানসিক চাপ কমায়
মানসিক চাপ সামনে নিলে দারুন এক মাধ্যম চুম্বন। ২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয় চুম্বন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
‘কিসিং: এভরিথিংক ইউ এভার ওয়ান্টেড টু নো অ্যাবাউট ওয়ান অব লাইফ‘স সুইটেস্ট প্লেজারস’ বইয়ের লেখক আন্দ্রেয়া ডেমিরজিয়ানের মতে, চুম্বন হৃদস্পন্দনকে বৃদ্ধি করে। যার ফলে রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয় এবং রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। যার ফলে রক্তচাপ হ্রাস পায়।
মাসিকের ব্যথা কমায়
ঋতুকালীন সময়ের যন্ত্রণাদায়ক পিরিয়ড ক্র্যাম্প কমাতে সহায়তা করতে পারে চুম্বন। চুম্বনের প্রভাবে রক্তনালীগুলো প্রসারিত হওয়া এবং রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মাসিকের ব্যথা উপশমে সাহায্য করতে পারে চুম্বন।
মাথাব্যথা দূর করে
মাথাব্যথা থেকেও মুক্তি দিতে পারে গভীর একটি চুম্বন। রক্তনালীগুলোর প্রসারণ এবং রক্তচাপ কমিয়ে মাথাব্যথা দূরে করে। এছাড়া চুম্বন আপনার স্ট্রেস কমিয়ে মাথাব্যথা প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করতে পারে। মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হলো স্ট্রেস।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
চুম্বনের মাধ্যমে যে লালারস বা সালিভার আদানপ্রদান হয়, তাতে শরীর পরিচিত হয় নতুন ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে
২০০৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দম্পতিরা রোমান্টিক চুম্বনের হার বাড়িয়েছে তাদের টোটাল সিরাম কোলেস্টেরলের উন্নতি হয়েছে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোক সহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
দাঁতের ক্যাভিটি প্রতিরোধ করে
দাঁতের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও চুম্বন বেশ উপকারি। চুম্বন লালা গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে। এর ফলে বাড়ে লালার উৎপাদন। যে কারণে দাঁতের উপর আস্তরণ সৃষ্টিকারী পদার্থগুলো জমার সুযোগ পায় না। ফলে দাঁতে গর্তও সৃষ্টি হয় না।
ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখে
চুম্বনের সময় মুখের ৩০টিরও বেশি মাংস পেশির সংকোচন ও প্রসারণ হয়, ফলে মুখের অতিরিক্ত মেদ ঝরে যায়। নিয়মিত চুম্বন, আপনার মুখ এবং গলার জন্য একটি ওয়ার্কআউটও বলতে পারেন। মুখের পেশিগুলোর সংকোচন ও প্রসারণের ফলে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ে, যার ফলে ত্বক হয় টানটান। ত্বকে তারুণ্যতা বজায় থাকে।
ক্যালোরি ঝরাতে সহায়তা করে
চুম্বন ক্যালোরি ঝরাতেও সহায়তা করে। কতটা আবেগের সঙ্গে চুম্বনের করছেন, তার উপর নির্ভর করে প্রতি মিনিটে প্রায় ২ থেকে ২৬ ক্যালোরি পর্যন্ত ঝরানো যেতে পারে। তবে আপনি যদি ওজন কমানোর চেষ্টা করেন তাহলে এটি ওজন কমানোর কার্যকর পদ্ধতি নাও হতে পারে।