জনতার খবর ডেক্সঃ দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ বাংলাবাজর শিমুলিয়া নৌরুট। এই রুটে ফেরি চলাচলে দুর্ভোগ কমেনি কয়েক দিনে। তীব্র স্রোতের কারণে এই রুটের ১৮টি ফেরির মধ্যে চলাচল করছে মাত্র ৪টি। ফলে নদীর উভয় পাড়েই পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে যানবাহন। এদিকে গত দুইদিন থেকে রাতের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখছে কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিটিসি সূত্রে জানা গেছে, নৌরুটের ১৮টি ফেরি সচল থাকলেও চলাচল করছে মাত্র ৪টি। মূলত পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের বিপরীতে চলতে না পারায় ১৪টি ফেরি ঘাটে বেঁধে রাখা হয়েছে। গত দুই মাসে ১২ পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগে।
পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা লাগা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার দুপুরে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা ঘাট পরিদর্শন করেছেন। এছাড়াও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে মতবিনিময় সভারও আয়োজন করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ মাওয়া রেস্টহাউজ রোববার এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ছাইদুর রহমান।
তিনি জানান, সভায় সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন জনের মতামত গ্রহণ করা হয়। পদ্মা নদীতে চলমান বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপ বৃদ্ধির কারণে মাওয়া অঞ্চলে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়াগামী ফেরিসমূহকে পদ্মা সেতু থেকে মাত্র ১.৩ কি.মি. দূরত্বে হাজরা চ্যানেল দিয়ে বের হতে হয়। হাজরা চ্যানেল দিয়ে আনুমানিক ৩৪০ ডিগ্রি কোর্সে হেড রেখে বের হয়ে পদ্মা সেতুর পিলারসমূহকে ৯০ ডিগ্রি কোর্সে অতিক্রম করতে হয়। বের হয়েই তাকে তীব্র স্রোতের সম্মুখীন হতে হয়।
তীব্র স্রোতের মধ্যে ৩৪০ ডিগ্রি থেকে ৯০ কোর্সে যাওয়ার জন্য তাকে ১১০ ডিগ্রি হেড ঘুরানোর প্রয়োজন হয়। সেতু থেকে ১.৩ কি.মি দূরত্বে থেকে বিষয়টি অনেকটা দূরুহ কাজ হয়ে পড়ে। যার ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় সময়ই ফেরি পিলারে ধাক্কা খাচ্ছে। সমস্যা থেকে পরিত্রাণের একটি লাইটেড বয়া স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ফেরি সমূহ হাজরা চ্যানেল থেকে বের হয়ে স্থাপিত বয়াকে টার্গেট করে বয়ার কাছাকাছি পৌঁছে সেতু অতিক্রম করার নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও রাতের বেলায় আপাতত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজারগামী ফেরিসমূহ স্রোতের প্রতিকূলে যাবে বিধায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে তাই তারা ৬-৭ নম্বর স্প্যান ব্যবহার করবেন তবে পরিস্থতি অনুযায়ী দুইপাশের দুটি স্প্যানও ব্যবহার করা যাবে বলে নির্দেশ দেয়া হয়।
সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১২-১৩ স্প্যান হতে ৩ কি.মি. পশ্চিমে রোববার দুপুরে একটি লাল লাইটেড বয়া স্থাপন করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক এস এম আশিকুজ্জামান, বিআইডব্লিউটিএ পরিচালক (নৌ-সওপ) মো. শাহজাহান, বিআইডব্লিউটিএ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ছাইদুর রহমান, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির ও প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদির প্রমুখ।