জনতার খবর ডেস্কঃ চাঁদের বুকে পা রাখতে চলেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আরব বিশ্বের কোনো দেশের প্রথম নারী হিসেবে চাঁদের বুকে হাঁটবেন আমিরাতের মহাকাশচারী । নির্বাচিত দুজনের মধ্যে একজন হচ্ছেন ২৮ বছরের তরুণী মেকানিক্যাল ইঞ্জি. নুরে আল মাত্রুশি। অন্যজন ৩২ বছর বয়সি মোহাম্মদ আলমুল্লাহ।
চাঁদে অবতরণের পর পরই অনন্য এক রেকর্ডে নাম লেখাবেন নুরে আল মাত্রুশি। অবশ্য চাঁদের উদ্দেশ্যে মহাকাশযানে উঠলেই ইতিহাস লিখবেন নোরা। কারণ এটি হবে কোনো আরব মুসলিম নারীর প্রথম মহাকাশ ভ্রমণ।
আরব আমিরাতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, প্রায় সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। দুই মহাকাশচারী নোরা ও আলমুল্লাহকে দুই বছরের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে পাঠানো হবে শিগগিরই।
এর আগে নোরার সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোহাম্মদ আল-মোল্লাসহ মোট চারজন দেশটির নভোচারী প্রকল্পের অংশ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন । এদের মধ্যে একজন হাজ্জা আল-মানসুরি ২০১৯ সালে একবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ভ্রমণ করে এসেছেন।
বিজ্ঞান ভিত্তিক লেখাপড়া এবং ব্যবহারিক অভিজ্ঞতার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক অবস্থার মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে ৪ হাজার ৩০০ আবেদনকারীর মধ্য থেকে নোরাসহ এই চারজনকে নির্বাচন করা হয়েছিলো বলে জানায় দুবাইয়ের মোহাম্মদ বিন রশিদ স্পেস সেন্টার।
নিজের মহাকাশ যাত্রার বিষয়টি নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত নুরে আল মাত্রুশি। তিনি বলেন, ছোটবেলা কাগজ আর কার্ডবোর্ডের বাক্স দিয়ে মহাকাশযান বানাতাম। আর স্বপ্ন দেখতাম সেই মহাকাশযানে চেপে মহাকাশে যাওয়ার। চাঁদে যাচ্ছি-এমন অনেক খেলা খেলতাম। মাকেও বলতাম। এখন সত্যি সত্যি যাচ্ছি। সেপ্টেম্বরে যাব নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে। সেখানেই শুরু হবে টানা দুবছরের প্রশিক্ষণ। চাঁদ অথবা আন্তর্জাতিক মহাকাশে স্টেশনে শেষ পর্যন্ত যেতে পারলে আমার অন্তরে লুকিয়ে থাকা শিশুটিই বোধহয় সবচেয়ে বেশি খুশি হবে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম দেখার পরেই ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন নুরে আল মাত্রুশি। পাশ করেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। তার পর চাকরি করেছেন একটি পেট্রোলিয়াম শিল্প সংস্থায়। আমিরাতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা মহাকাশচারী খুঁজছে জানতে পেরে আবেদন করেন নুরে। পরীক্ষার ভিত্তিতে তাকে বেছে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে এবং তেলের উপর নির্ভরতা কমাতে মহাকাশ প্রকল্পের উন্নয়নে বিশেষ জোর দিচ্ছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে আরব বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে একটি মহাকাশযান পাঠায় সংযুক্ত আরব আমিরাত। আমিরাতের মহাকাশযান ‘হোপ’ ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলগ্রহের কক্ষ পথে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে লাল এই গ্রহটির ছবি পাঠায়।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুন রোভার এবং ২১১৭ সালের মধ্যে মঙ্গলে একটি সেটলমেন্টের জন্যও পরিকল্পনা করেছে।