আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আফগানিস্তান দখলে নেওয়ার পর ভারত সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করল তালেবান। ভারতের সঙ্গে সব আমদানি-রপ্তানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে তারা। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশন (এফআইইও)-র বরাত দিয়ে ১৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজার।
এছাড়া পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অবস্থিত দু’টি বাণিজ্যিক টার্মিনালও বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান। ভারতীয় রফতানিকারক সংস্থাগুলোর সংগঠনের দাবি, পাকিস্তানের দিকে পণ্য পরিবহনে বাধা দিচ্ছে তালেবান।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের (এফআইইও) ডিরেক্টর জেনারেল ড. অজয় সহাই জানিয়েছেন, গত রোববার কাবুলে প্রবেশ করে আফগানিস্তান দখলের পর ভারতের সঙ্গে সমস্ত আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান। তিনি বলছেন, বর্তমানে পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে সকল ট্রানজিট রুটে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান। ফলে আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে।
অজয় সহাই আরও বলছেন, আমরা আফগানিস্তানের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। সেখান থেকে পণ্য আমদানি হয় পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট রুটে। তালেবান পাকিস্তানের দিকে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আমদানি কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। আফগানিস্তানে ভারতের বিনিয়োগের পরিমাণও অনেক।
এফআইইও’র ডিরেক্টর জেনারেল সহাই বলেছেন, ভারত আফগানিস্তানের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। চলতি বছর এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানে ভারতের রফতানির পরিমাণ প্রায় ৮৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সময়ে দেশটি থেকে ভারতের আমদানির পরিমাণ প্রায় ৫১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এছাড়া বাণিজ্যিক সম্পর্কের বাইরেও আফগানিস্তানে ভারতের বিপুল অংকের বিনিয়োগ রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আফগানিস্তানে বর্তমানে ভারতের প্রায় ৪০০টি প্রকল্প চলছে।
সহাই জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভালো। ওষুধ, তৈরি পোশাক, চা, কফি, মশলা, ট্রান্সমিশন টাওয়ারের মতো পণ্য আফগানিস্তানে রফতানি করে থাকে ভারত। এছাড়া দেশটি থেকে ভারতে আমদানি হয় মূলত শুকনো ফল।
অজয় সহায় আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত আফিগানিস্তান একটা সময় পর অনুভব করবে যে, এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ অর্থনৈতিক উন্নতি। ব্যবসার মাধ্যমেই যা সম্ভব।’ তবে আমদানি-রপ্তানির সিংহভাগ বন্ধ হলেও দুবাই হয়ে কিছু পণ্য চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।