ইরানের সদ্য প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান ও অন্য সঙ্গীদের লাশ দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের মাশহাদে পৌঁছেছে। সেখানে তাদেরকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হয়েছেনে কয়েক লাখ মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেলে রাইসি ও তার সহযোগীদের কফিন বহনকারী গাড়ি প্রাদেশিক রাজধানী মাশহাদের নেজাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। সেখানে কফিনগুলোকে স্বাগত জানান মাশহাদের কয়েক লাখ মানুষ।
এই সময় শোকের প্রতীক কালো পোশাক পরিহিত অধিবাসীদের হাতে হাতে দেখা যায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট রাইসির ছবি। তারা রাইসি ও তার সঙ্গীদের প্রতি শেষবারের মতো শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এভাবে অশ্রুসিক্ত মানুষগুলোর মধ্যদিয়ে কফিনগুলো আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। আর কিছুক্ষণ পরই এই মাশহাদের কেন্দ্রস্থলে অষ্টম শিয়া ইমাম ইমাম রেজা (আ.)-এর পবিত্র মাজারে দাফন করা হবে ইরানের প্রয়াত প্রধান নির্বাহী রাইসিকে। এই খোরাসানের একটি আসন থেকে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতেন রাইসি।
রাইসি ও সহযোগীদের কফিনগুলো বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় খোরাসান রাজাভির বিরজান্দ শহরে নেয়া হয়। সেখানে কফিনের গাড়িকে গ্রহণ করেন ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর কফিনগুলোকে মাশহাদের নেজাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেয়া হয়।
এর আগে বুধবার (২২ মে) সকালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে রাইসি ও তার সঙ্গীদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে দেশটির রাজধানী তেহরানে ঢল নামে লাখো মানুষের।
গত শনিবার (১৮ মে) একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আজারবাইজান সফরে যান প্রেসিডেন্ট রাইসি। রোববার (১৯ মে) দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে দুদেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করেন তিনি।
সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে রাইসিকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
কয়েক ঘণ্টা পর হেলিকপ্টারটিতে থাকা সব আরোহীর মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে ইরান সরকার। তবে অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
এদিকে রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়া দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। এরই মধ্যে তদন্তও শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনা তদন্তে উচ্চপদস্থ একটি প্রতিনিধিদলকে দায়িত্ব দিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি।