জনতার খবর ডেক্সঃ
আমেরিকার নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসির মতোই এবার লস অ্যাঞ্জেলসে অনুষ্ঠিত রোড শো’র তৃতীয় পর্বেও মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশি টেক জায়ান্ট ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। দেশের শেয়ারবাজারসহ সার্বিক অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি, বিনিয়োগ সুযোগ-সুবিধা এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরতে যুক্তরাষ্ট্রের চারটি বড় শহরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্যোগে এই রোড শো’র সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ওয়ালটন।
নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটনের মতো লস অ্যাঞ্জেলসের রোড শো’তেও আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি সবার আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল ওয়ালটন। বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে তারা এই তিন শহরের রোড শো’তে ওয়ালটনের স্টলে ভিড় করেছেন। অনুষ্ঠানের মঞ্চে কোনো বক্তার মুখে যখনই ওয়ালটনের নাম উচ্চারিত হয়েছে, তখনই হাততালি দিয়ে সবাই ওয়ালটনের সাফল্যকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। স্বীয় কৃতিত্ব এবং সাফল্যের আলোতে ওয়ালটন এই রোড শো’তে নিজস্ব দ্যুতি ছড়িয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলসের রোড শো’তে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী এবং স্টেকহোল্ডারদের কাছে শেয়ারবাজারসহ সার্বিক অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি, বিনিয়োগ সুযোগ-সুবিধা এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি ওয়ালটনের কর্মব্যাপ্তি ও সুপরিচিতির তথ্য বিভিন্ন বিনিয়োগকারীদের সামনে উপস্থাপন করেন লস অ্যাঞ্জেলসে আগত বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) লস অ্যাঞ্জেলসে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার, ৩১ জুলাই ভোর সাড়ে ৬টা) ইন্টারকন্টিনেন্টাল লস অ্যাঞ্জেলস ডাউনটাউন হোটেলের উইলশায়ার গ্রান্ড বল রুমে শেয়ারবাজার বিষয়ক এ রোড শো অনুষ্ঠিত হয়।
‘দি রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব ট্রেড এবং ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’- শীর্ষক এটি বিএসইসির তৃতীয় পর্বের এ রোড শো। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের শেয়ারবাজারের ব্যাপ্তি ও প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।
লস অ্যাঞ্জেলসের রোড শো’র শুরুতে ওয়ালটনের উৎপাদন ও মার্কেটিংয়ের ওপর নির্মিত ডিজিটাল ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। এতে ওয়ালটনের ভিশন এবং মিশন সম্পর্কে বিনিয়োগকারীরা অবহিত হন।
রোড শো’তে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ১০ বছর আগে বাংলাদেশের যে কোনো ব্যবসায়ীর কাছে যদি জানতে চাওয়া হতো, তোমার ব্যবসায় সবচেয়ে বড় সমস্য কি? তিনি বলতেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা লোড শেডিং। বিদ্যুৎতের অভাবে যথাযথভাবে কারখানা চালানো যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রে যে কয়টি রোড শো অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে বিদ্যুৎ ঘাটতির সমস্যা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করেননি। কারণ এ সমস্যার সমাধান হয়েছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি না থাকার কারণে এখন দেশে গ্রামের মানুষ ফ্রিজ ব্যবহার কারছেন। কোনো কোনো গ্রামে ওয়াশিং মেশিন ও মাইক্রোওভেন ব্যবহার হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকা। আগে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকার কারণে গ্রামে এসব জিনিস ব্যবহার হতো না। যার ফলে দেশে ওয়ালটনসহ অরো অনেক ভালো কোম্পানি বেরিয়ে এসেছে। তারা এখন মার্কেটের জন্য ভালো মানের ইলেক্ট্রোনিক্স পণ্য উৎপাদন করছে। এটা বিদ্যুতায়নের ইতিবাচক দিক।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। এখন ধীরে ধীরে বাংলাদেশ হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজসহ ইলেক্ট্রোনিক ও অন্যান্য ম্যানুফ্যাকচারিং পণ্য উৎপাদনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে, ওয়ালটন বাংলাদেশের অন্যতম স্থানীয় ম্যানুফ্যাকচারিং পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ রোড শোতে উপস্থিত রয়েছেন। কোম্পানিটি বাংলাদেশেই সকল প্রকার গৃহস্থালি পণ্য-সামগ্রী উৎপাদন করছে। ওয়ালটনের মতো আরো অনেক কোম্পানি রয়েছে। এখন ওই কোম্পানিগুলো অটোমোবাইল পণ্য উৎপাদনেও আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া এ রোড শো ২৬ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। আগামী ২ আগস্ট সিলিকন ভ্যালি সান ফ্রান্সিসকোতে চতুর্থ এবং শেষ পর্বের রোড শো আয়োজিত হবে।