আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে হামলা চালালেও এখন পর্যন্ত পূর্ণ মাত্রায় বিমানবাহিনীকে ব্যবহার করেনি রাশিয়া। যদিও মার্কিন গোয়েন্দাদের পূর্বাভাস ছিল, ইউক্রেনে নিজেদের যুদ্ধবিমান বহরের ক্ষমতা দেখাবে রাশিয়া। তবে রাশিয়ার ঝুঁকি-প্রতিরোধী আচরণে হতবাক মার্কিন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা। এর কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। ইউক্রেনে আক্রমনের আগেই মার্কিন গোয়েন্দারা পূর্বাভাস দেন, স্থলবাহিনীর পাশাপাশি বিমানবাহিনীর সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে রাশিয়া। শুধু তাই নয়, ঝাঁকে ঝাঁকে যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে ইউক্রেনের আকাশ দখল করবে পুতিন বাহিনী, এমনটাও ধারণা করেছিলেন তারা। তবে অভিযানের প্রথম ৭ দিনে তাদের সে ধারণা পুরোপুরিই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কেননা, এখন পর্যন্ত পূর্ণ সক্ষমতার ধারেকাছেও নিজেদের বিমানবাহিনীকে ব্যবহার করেনি রাশিয়া। ক্রেমলিনের এমন কৌশলে বিভ্রান্তিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দারা।
ঊর্ধ্বতন এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার ধারণা, নিজস্ব বিমান এবং পাইলটদের নিয়ে বাড়তি ঝুঁকি নিতে চাইছে না রাশিয়া। সামরিক শক্তিতে রাশিয়ার তুলনায় অনেক পিছিয়ে ইউক্রেন। তারপরও ইউক্রেনের যুদ্ধবিমান আকাশে উড়ছে এবং বিমান প্রতিরক্ষা কার্যকর বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বিস্মিত সামরিক বিশেষজ্ঞরা। লন্ডন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়াই স্বাভাবিক ছিল। কারণ ১৯৩৮ সাল থেকে প্রতিটি সামরিক অভিযানেই এই কৌশল অনুসরণ করা হয়েছে।
রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ রব লি বলেন, রাশিয়া এমন অনেক কিছু করছে যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। রাশিয়া এই যুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে বলে ধারণা করলেও কেন মস্কো তা করেনি, তার কোন বাস্তবসম্মত ব্যাখ্যাও পাচ্ছেন না রব লি। রাশিয়ার বিমানশক্তির ব্যবহার নিয়ে এমন সময়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা, যখন কিয়েভের নো ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠার আহ্বানকে নাকোচ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এদিকে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশে সামরিক তৎপরতা বন্ধের জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জো বাইডেন। ইউরোপের সবচেয়ে বড় ইউক্রেনের জেপোরজিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দখল নিতে বৃহস্পতিবার হামলা চালায় রাশিয়া। এর আগে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আগুন ধরে যায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে। পরে শুক্রবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এ ঘটনা শুধু ইউরোপ এবং ইউক্রেনের জন্য নয়, এটি পুরো বিশ্বের জন্য উদ্বেগজনক।