জনতার খবর ডেক্সঃ
মুজিব শতবর্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ আওতায় ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অনিয়মে জড়িত ১৮০ জনের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রয়েছেন। ইতোমধ্যে দুইজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা, পাঁচজনকে ওএসডি ও একজনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা করা হয়েছে ।
এ এব্যাপারে জেলা প্রশাসকরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিদর্শন দলের সদস্যরা। তাদের প্রতিবেদনে ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও অবহেলার চিত্র উঠে এসেছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘর নির্মাণের বেলায় নীতিমালা মানা হয়নি। অনেক ঘরে নির্মাণে ক্রটি রয়েছে, গুণগত মান ঠিক হয়নি। ঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। পিলার ভেঙে গেছে। দেয়াল ধসে পড়েছে। ঘর নির্মাণে ব্যবহূত মালামালও ছিল নিম্নমানের। নিচু এলাকায় ঘর নির্মাণ করায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আবার ভূমির মালিকরাও ঘর বরাদ্দ পেয়েছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮০ জন ভূমিহীনকে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনিয়মের খবর বিভিন্ন সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। অনিয়মকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।
এ সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্লোগান হলো, ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। এর সঙ্গে আমাদের সবার আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ক্রটিবিচ্যুতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও শৈথিল্যের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
প্রতিবেদনে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, বরগুনার আমতলী, বগুড়ার শেরপুর, শাজাহানপুর, হবিগঞ্জের মাধবপুর, সুনামগঞ্জের শাল্লা ও মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলায় ঘর নির্মাণে অনিয়ম, অবহেলা ও দুর্নীতির ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। গত রবিবার সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে ইউএনওর দায়িত্ব পালন করে আসা শফিকুল ইসলামকে ওএসডি করা হয়েছে। বরগুনার আমতলীর ইউএনও আসাদুজ্জামানকে ওএসডি করা হয়েছে গতকাল সোমবার। এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
এছাড়া বগুড়ার শেরপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করে আসা লিয়াকত আলী সেখকে গত রবিবার, মুন্সীগঞ্জ সদরে ইউএনওর দায়িত্ব পালন করে আসা রুবায়েত হায়াত শিপলুকে গতকাল সোমবার। মুন্সীগঞ্জ সদরে কর্মরত সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিনকে গতকাল সোমবার ওএসডি করা হয়েছে। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সাবেক ইউএনও মাহমুদা পারভীন, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সাবেক ইউএনও তাসনুভা নাশতারান, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ইউএনও আল-মুক্তাদির হোসেনকে ওএসডি এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।