নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ॥
স্বল্প সময় ও অল্প বরাদ্দের কারণেই মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রথমপর্যায়ে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আংশিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলার সদর উপজেলার কীর্তনখোলা নদীর তীরের চরমোনাই ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু উপহারের ঘরের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসক পুরো ঘটনার তদন্তে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠণ করেছেন। পাশাপাশি টেকনিক্যাল কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করছেন।
শনিবার বিকেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছেন, ঘর নির্মানে সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা কোন অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি হয়নি। বরং তরিঘড়ি করে স্থান নির্ধারন করতে গিয়ে চরের খাস জমি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে অল্পব্যয়ে ঘরগুলো নির্মান করা হয়েছে। এছাড়াও প্রথমপর্যায়ের ঘরগুলো নির্মান করার সময় প্রবল বর্ষণ ও পরবর্তীতে ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে আংশিক ঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরবর্তীতে সংস্কারের জন্য অর্থবরাদ্দ চাওয়ার পরেও তা দেরি করে পাওয়ায় সংস্কার কাজ বিলম্বিত হয়েছে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বেশকিছু ঘর ধ্বসে পরেছে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছেন।
সচেতন নাগরিকদের মতে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিটি কবরস্থান নির্মানের জন্য সরকার আড়াই লাখ টাকা করে বরাদ্দ দিলেও আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মানের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। পরবর্তীতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা করা হয়েছে। কিন্তু নদী মাতৃক বরিশালের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ একেবারে কম হয়েছে।
অপরদিকে শনিবার দুপুর দুইটার দিকে জেলা প্রশাসকের আয়োজনে নগরীর সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে জমি ও গৃহ হস্তান্তর বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ সাইফুল হাসান বাদল। জেলা প্রশাসক মোঃ জসীম উদ্দীন হায়দারের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজিব আহমেদ, এনডিসি নাজমুল হুদা, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আলী সুজা। মতবিনিময় সভায় বরিশালের কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন, তদন্ত কমিটির রির্পোটে সরকারি কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, জেলায় দ্বিতীয় দফায় অসমাপ্ত বাকি ৩৩১টি গৃহ ও কবুলিয়ত সম্পাদনের কাজ চলমান রয়েছে। যা আগামী আগস্ট মাসে সমাপ্ত করা হবে।