নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ॥
মহামারি করোনা সংক্রামন রোধে লকডাউনে বরিশাল মহানগরীর সব হোটেল-রেস্তোরা বন্ধ করে দেয়ায় শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বজনরা চরম বিপাকে পড়েছেন। অথচ সরকার খাবার হোটেল বন্ধ রাখার নির্দেশনা না দিলেও বসে খাওয়া যাবেনা মর্মে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু শনিবার স্থনীয় প্রশাসনের এ নির্দেশনার পরে খাবার না পেয়ে মহাসংকটে পড়েছেন বিভিন্ন হসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনেরা। তবে মানবিক কারনে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের হোটেল মালিকরা খিচুরী রান্না করে বিনামূল্যে সরবরাহ করেছেন।
দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতেই প্রতিদিন দেড় সহ¯্রাধিক রোগী ভর্তি থাকে। প্রতি রোগীর সঙ্গে গড়ে ২/৩ জন স্বজন থাকেন। সে হিসাবে প্রতিদিন কেবলমাত্র শেবাচিম হাসপাতালে রোগী ও স্বজন থাকেন প্রায় ৫ হাজার। হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র রোগীদের খাবার দেয়া হলেও তা মানসম্পন্ন না হওয়ায় বেশীরভাগ রোগী তা গ্রহন করেন না। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা রোগী ও স্বজনরা হাসপাতাল সংলগ্ন হোটেল থেকে ৩ বেলা খাবার কিনে খান। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন হোটেলগুলো বন্ধ করে দেয়ায় খাবার সংকটে পড়েন রোগী ও স্বজনরা।
একইভাবে সংকটে রয়েছেন নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অবস্থানকারী আরো অন্তত সহ¯্রাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা। শেবাচিম হাসপাতাল সংলগ্ন বান্দ রোড সহ গোটা নগরীর হোটেল বন্ধ থাকায় রোগীদের পাশাপাশি অনেক কর্মজীবীও বিপাকে পড়েছেন। খাবারের জন্য হৈ-চৈ শুরু হয়ে গেছে নগরীতে। চায়ের দোকানও বন্ধ রয়েছে। এসব মানুষের দুর্দশা দেখে ৯ হোটেল মালিক একত্রিত হয়ে ৬ মন চাল-ডাল দিয়ে খিচুরী রান্না করে বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন। রোগীদের স্বজনরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সকালের খিচুরী সংগ্রহ করলেও দুপুর থেকে পরবর্তী বেলার খাবারের অনিশ্চয়তায় রয়েছেন রোগী ও স্বজনরা।
এ ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতাল কতৃপক্ষ সংবাদিকদের বলেছেন, প্রশাসন হোটেল রেস্তোরা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জেলা প্রশাসক, সিটি মেয়র, বিভাগীয় কমিশনার এটি দেখছেন। আমাদের এক্ষেত্রে কিছুই করার নেই।
উল্লেখ্য, বরিশাল নগরীতে করোনা সংক্রামন পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সভাপতিত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির যৌথ সভায় নগরীতে হোটেল রেস্তোরা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।