বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলার দক্ষিন বাগধাঁ গ্রামে পারভীন নামের এক নারীকে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পর ওই নারীকে হাসপাতালে নিতেও বাধা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের সহায়তায় সোমবার বিকেলে ওই নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন পারভীন কে দেখতে গিয়েছিলো থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় পারভীনের ভগ্নিপতি ইমদাদুল হক বাদী হয়ে প্রধান নির্যাতনকারী ইলিয়াশ খানসহ ৭ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার রাতেই মামলা দায়ের করেছেন বলে সমকালকে জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ছরোয়ার। তবে বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত আসামিরা কেউ গ্রেফতার হয়নি।
নির্যাতনের শিকার পারভীনের ভগ্নিপতি ইমদাদুল হক জানান, স্বরূপকাঠীর কাটাখালী থেকে সোমবার দুপুরে তার বাড়িতে বেড়াতে আসেন পারভীনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রতিপক্ষ কাশেম খানের বাড়ির পাশ দিয়ে তার বাড়িতে প্রবেশের সময় কাশেমের ছেলে ইলিয়াস খান ও তার স্ত্রী রেখা বেগম তাদের পথরোধ করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন পারভীনকে মারধর করে। এসময় ইলিয়াসের পরিবারের লোকজন তাকে শিকল দিয়ে বাড়ির সামনে একটি আমড়া গাছের সাথে তালা দিয়ে আটকে রাখে এবং মারধর করে। মারধরের হাত থেকে পারভীনকে উদ্ধার করতে যাওয়ায় বোন সুমি ও ভাই শাহজালালকেও মারধর করে তারা।
শিকলে বাঁধা অবস্থায় পারভীনের ডাক চিৎকারে গ্রাম পুলিশ সদস্য পরেশ দাস, স্থানীয় আবুল কালাম সরদার ও আব্দুল হক ঢালী এগিয়ে গেলে তাদের প্রতিবাদের মুখে শিকলে বাঁধা অবস্থা থেকে পারভীনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় ইলিয়াস।
আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আল আমীন হোসাইন জানান, আহত গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বাগধাঁ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল শিকলে বেঁধে নারীকে নির্যাতনের ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম ছরোয়ার বলেন, শিকলে বেঁধে এক নারীকে নির্যাতনের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নারীর ভগ্নিপতি ইমদাদুল হক লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় তা মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।