আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আফগানিস্তানে নারী অধিকারকে আরও একবার প্রশ্নবিদ্ধ করলো তালেবান। মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ, পুরুষসঙ্গী ছাড়া নারীদের দূরে ভ্রমণ নিষিদ্ধ, বাইরে বেরোলে সব নারীর বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করার পর এবার টেলিভিশনে সম্প্রচারকালে নারী উপস্থাপকদের মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দিলো গোষ্ঠীটি। খবর বিবিসির।
বুধবার (১৮ মে) আফগানিস্তানের মিডিয়া আউটলেটগুলোকে তালেবানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ডিক্রি জারির কথা জানানো হয়েছে। বিবিসি পশতুকে এ তথ্য জানিয়েছেন এক আফগান পুলিশ কর্মকর্তা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তালেবানের নতুন এ নির্দেশনার সমালোচনা করেছেন অনেকে। কারও কারও মতে, এর মাধ্যমে উগ্রবাদের প্রচারণা চালাচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী।
ডিক্রি জারির পর বেসরকারি আফগান টিভি চ্যানেল শমশদ নিউজ তাদের উপস্থাপিকাদের মুখে মাস্ক পরে থাকার কিছু ছবি শেয়ার করেছে। দেশটিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের আরও অনেক ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক ব্যক্তি টুইটারে বলেছেন, করোনা থেকে বাঁচাতে মানুষকে মাস্ক পরতে বলছে বিশ্ব। আর মানুষকে নারী সাংবাদিকদের মুখ দেখা থেকে বাঁচাতে মাস্ক পরাচ্ছে তালেবান। তালেবানের কাছে নারীরাই হচ্ছে অসুখ।
এর আগে, চলতি মাসের শুরুর দিকে আফগানিস্তানে বোরকা ছাড়া নারীদের বাইরে বেরোনো নিষিদ্ধ করে তালেবান। গত ৭ মে তালেবান প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদার জারি করা এক ডিক্রিতে বলা হয়, কোনো নারী বাড়ির বাইরে মুখ না ঢাকলে তার বাবা বা নিকটতম পুরুষ আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করা হবে এবং তাকে (আত্মীয়) বন্দি বা সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। তার আগে আফগানিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হেরাতে নারীদের নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল তালেবান কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের আগস্টে সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ১৯৯৬-২০০১ সালের তুলনায় নিজেদের এবারের শাসনামলে বেশি উদারতা দেখানো হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। তবে সেটি হয়নি। আফগানদের অধিকারে একের পর এক খড়গ বসায় তালেবান, বিশেষ করে নারী ও মেয়েদের বিষয়ে।
দেশটিতে এখনো মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ। এমনকি আফগানিস্তানের নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নামও বদলে দিয়েছে তালেবান। এটি এখন ধর্ম প্রচার ও অধর্ম প্রতিরোধ মন্ত্রণালয় নামে পরিচিত।